অপরাজিত

অনেককাল (!) আগে, বয়ঃসন্ধিতে একবার পড়েছিলাম। এখন আবার পড়লাম, বহুদিন ইচ্ছে করে দূরে সরিয়ে রাখার পর। পড়ার পর অনেককিছু নতুন ঠেকলো। মাথার মধ্যে অনেককিছু ঘুরছে।

প্রথমে আসি এই বইয়ের সাহিত্যমানের জায়গায়। সাহিত্য আর কাব্য কিন্তু এক জিনিস না। সাহিত্য হচ্ছে সমাজের হিতে আসে যা, কাব্য হিতাহিতের বিচার করে না।

তো, আমাদের যে হিতাহিতের বিবেচনা, তাতে এই বইটিকে কোনোভাবেই সাহিত্য বলা চলে না। কেরাণী পিতা-মাতারা (কেরাণী এখানে পেশা না, স্বভাব। মধ্যবিত্তের ছাপোষা জীবনের স্বভাব।) এরকম বইকে ‘আউট বই' বলে সন্তানের হাতে নাগালের বাইরে রাখতে চান। নাহলে দুরন্ত পড়ুয়া, উদার, বাউণ্ডুলে হয়ে যেতে পারে। তাতে কেরাণী হওয়ার বড্ড অসুবিধা। এমনটা আমাদের জন্য হিতকর নয়, এমনটা তাই সাহিত্য নয়।

কাব্য অবশ্য হিতের ধার ধারে না। কারো কাছে সাহিত্য হবার আবদার ধরে না। অপরাজিত যথার্থ কাব্য। অত্যন্ত ব্যক্তিগত, যেন নিজের সঙ্গে কথা বলার মত। অপু অসামাজিক। সংবেদনশীল, উদার, তবু অসামাজিক। সেটাই তার জোর। সে শুধু কুড়োয়, কিচ্ছু ফেলে না, কিচ্ছু তার কাছে ছোট না। জীবনকে দেখার এই শিশুত্ব সারাজীবন বয়ে নিয়ে গেছে সে। অথচ, কোথায় বড়ও হয়ে গেছে ইতমধ্যে। মাঝখানে একটা দীঘির মত স্থির বিষাদ, পুরোটা বই জুড়ে।

December 10, 2019Report this review