Ratings1
Average rating4
Reviews with the most likes.
চমৎকার একটা উপন্যাস। আমার পড়া হুমায়ূন আহমেদের অন্যতম সেরা উপন্যাস। ইদানিং তাঁর যেসব লেখাপত্র পড়ছিলাম, বেশিরভাগই ভালো লাগছিলো না। খুব বেশি আশা না-নিয়েই এই উপন্যাসটা শুরু করেছিলাম। একদম ছোটো উপন্যাস। এটা কিন্তু খুব ভালো লেগে গ্যালো।
এই উপন্যাসে হুমায়ূনীয় অনেক কিছুই নেই। “অসম্ভব রূপবতী” এবং “প্রচণ্ড বুদ্ধিমতী” কোনো মেয়ে নেই। সেই বুদ্ধিমতী-রূপবতীকে দূর থেকে ভালোবাসে এমন কোনো নিঃস্বার্থ আলাভোলা প্রেমিক নেই। উপরে ভীষণ কঠিন কিন্তু ভেতরে তুলতুলে নরম হৃদয়ের বাবা নেই। আধপাগল মামা কাকা জ্যাঠা পিসেমশাই মেসোমশাই নেই। অলৌকিক আজগুবি কান্ডকারখানা নেই।
আর একটা আশ্চর্য ব্যাপার। “যার রাগ বেশি সে নীরবে অনেক ভালোবাসতে জানে, যে নীরবে ভালোবাসতে জানে তার ভালোবাসার গভীরতা অনেক বেশি”, কিংবা “মেয়েদের স্বভাবই হচ্ছে হালকা জিনিস নিয়ে মাতামাতি করা”, কিংবা “যদি আপনি অন্তর থেকে কাউকে চান, জেনে রাখুন সেই মানুষটিও আপনাকে ভেবেই ঘুমাতে যায়”— এই ধরণের হুমায়ূন-সুলভ “উক্তি” এই বইতে একটাও নেই। বিষয়টা আমাকে খুবই অবাক করেছে। উক্তিবিহীন বই তিনি কীভাবে লিখলেন?!
বাবার সঙ্গে মেয়ের, মেয়ের সঙ্গে মায়ের, বোনের সঙ্গে ভাইয়ের, স্ত্রীর সঙ্গে তার প্রাক্তন স্বামীর, ইত্যাদি যে-সম্পর্কগুলো আমাদের চারপাশে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকে, আমরা নিজেরাও যে-সম্পর্কগুলোতে প্রায়শ অংশগ্রহণ করি, মধ্যবিত্ত জীবনের তেমন কিছু সম্পর্ককে দারুন পারদর্শিতার সঙ্গে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই কাহিনিতে।
পড়তে পড়তে রমাপদ চৌধুরী কিংবা মতি নন্দী কিংবা গৌরকিশোর ঘোষ কিংবা বিমল করের কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। হুমায়ূন আহমেদের রচনার এই বাস্তবসম্মত রূপ আমি খুব বেশি দেখিনি। শুধু একটাই আফসোস। হুমায়ূন তাঁর গল্পে মানসিকভাবে শক্তিশালী নারীদের এতো কষ্ট দেন ক্যানো? এই নারীরা নিজেদের শক্তি প্রয়োগ করে যদি জিতে যেত জীবনে, তাহলে আরো ভালো লাগতো আমার।