গল্প ১০১
গল্প ১০১
Ratings2
Average rating4.5
পড়েছিনু বহুদিন তরে
সবুজ মলাট দেওয়া কেতাবখানি খুলে,
হয়েছি সওয়ার যে কতো, গল্পের তরীটি বাহিয়া—
আজি তাহা গিয়াছিনু ভুলে।
গ্রীষ্মের দাবদাহে চিত্ত মোর যবে
ত্রাহি ত্রাহি ডাক ছাড়ে দিবানিশিভরি,
পরশে হরষ জাগে যেই ক্ষণে উল্টাইয়া পৃষ্ঠা
খান-তিনেক গল্প আমি পড়ি।
কিংবা যদি গগনে-গগনে ডাকে দেয়া
অপরাহ্নে গুরু গুরু রবে,
হাম্বাগণ ধায় নিজ গৃহপানে দৌড়াদৌড়ি করি ;
বাতায়নে বসি আমি, এই গ্রন্থ পাঠ করি নীরবে।
উতলা পরাণ মম, সোয়েটার অঙ্গে জড়াইনু
শীতে যবে ঠকাঠক দন্তপাটি কাঁপি কাঁপি উঠে,
পারদের চিহ্ন যায় রসাতলে নামি, সেই দিনে—
এই বই ঠাঁই লয় মম দুই শীর্ণ করপুটে।
উৎসবে, আনন্দে, ঝগড়া-হাঙ্গামায়, কিংবা
বারো মাসে পার্বণ যে আছে চোদ্দোখানি,
অথবা যেদিন ঘোর স্যাডনেস ঘাড়ে চাপি ব'সে,
শেলফ হইতে স্যাট্ করে এই গ্রন্থ নিয়েছিনু টানি।
দিবস বহিয়া যায়, মাস যায়, বৎসরও ঘোরে—
পিছে পিছে খুব সন্তর্পনে ;
দাড়ি মোর পাকে, হেয়ারলাইন প্রশস্ত হয় নিশ্চুপে,
এ বই পড়িলে তবু নিজেরে ছোকরা লাগে দর্পণে!
কত শত অদ্ভুত চরিত্ররা আনাগোনা করে, আর
প্লটের বাহার হেরি হিয়া মম উল্লাসে মারে লম্ফ,
কিবা গল্প রচি গেলে সুকুমারপুত্র তুমি, আহা
তব পার্শ্বে বাকি সব লাগে যেন কর্কশ জগঝম্প!
আজি এই শুভদিনে পিতার ভবনে বসি
কায়মন সমর্পিয়া তব লাগি পরম যতনে,
তোমারে সেলাম করি মহারাজ, এই রিভিউটি—
রবীন্দ্রের নকল মারি লিখিয়াছে অরূপরতনে।