নিরীশ্বরবাদীদের জগত বুদ্ধের একটা আলাদা জায়গা আছে। সেই ভাবে বুদ্ধের শিক্ষার সাথে একটা প্রাথমিক পরিচয় ছিল। গত বছর একটু গুরুত্বের সাথে পড়ার ফলে, বিশেষ করে নাগার্জুনের মূলমধ্যমককারিকা পড়ার পড় বৌদ্ধ দর্শনে অনেকটা আগ্রহ জন্মেছিল।
যে জিনিসটা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছিল সেটা হচ্ছে বুদ্ধ একসময় নিজেই কীভাবে দেবতা বনে গেলেন। এরজন্য বৌদ্ধধর্মের ডেভেলপমেন্টের বিষয়ে পড়ার দরকার ছিল। এই বইয়ে হাত দেওয়া সেই কারনে।
প্রথমত, যে জিনিসটা পরিষ্কার হওয়া দরকার সেটা হচ্ছে সিদ্ধার্থ সবার মতই মানুষ। ফলত, তার একটা খুব বড় কৃতিত্ব থাকলেই যে সে সর্বাঙ্গে প্রগতিশীল হবে এমন আশা করা অন্যায়। আসল বুদ্ধ কী বলেছেন সেটা যাচাই করা কঠিন, তবুও বলা যায় জন্মান্তরবাদ বা সমাজে নারীদের অবস্থানবিষয়ক ভাবনাগুলো তিনি প্রশ্ন না করেই নিয়েছেন।
বুদ্ধের সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব, আমার মতে, একটি দার্শনিক সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা। যেখানে বুদ্ধ বলেছেন বলে না, বরং যাচাই করে দেখতে বলা হয়েছে। তার ফলাফল কিন্তু দারুণ! আমরা যখন নাগার্জুনের দ্বান্দ্বিকতা পড়ি, আমরা দেখতে পাই মূল বুদ্ধের শিক্ষা থেকে সেটা কতদূর এগিয়ে গিয়েছে।
আমরা সহজেই বুঝতে পারছি যে বুদ্ধের পথে জ্ঞান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আরেকটা ভালো বিষয় হচ্ছে প্রেম (compassion) একইরকম গুরুত্বপূর্ণ। পৃথিবীর দিকে তাকালে যতরকম সমস্যা দেখা যায় তার মূলে আসলে এই দুটোরই অভাব।
বই হিসেবে এটা নাতিদীর্ঘ বলা চলে। তবে এর পিছনে লেখকের পড়াশোনা প্রচুর।