Ratings2
Average rating4.5
দর্শনের মূলে বোধ করি মানুষের আত্মদর্শনের চেষ্টা। তার অস্তিত্ব এবং অস্তিত্বের অর্থ, এই নিয়ে দর্শনের মতের শেষ নেই।
ঝামেলাটা শুরু হলো এই আধুনিক সময়ে (অর্থাৎ, ইউরোপের আধুনিক সময়ে) এসে। বিজ্ঞান যতই মানুষ ও প্রকৃতির সত্যের কাছাকাছি আসতে থাকলো, দর্শন ততই অধিবিদ্যাকে (metaphysics) অস্বীকার করতে থাকলো। ফলে হলো কি, আধুনিক মানুষ হুঁট করে বুঝতে পারলো, আকবর বাদশা আর হরিপদ কেরানীর মধ্যে বিশেষ পার্থক্য নেই। শুধু নেই, তাই শুধু নয়, ছেঁড়া ছাতা আর রাজছত্র মিলে যে বৈকুণ্ঠের পথে যাওয়ার কথা ছিল, সেই বৈকুণ্ঠও লাপাত্তা। ‘Karma' নামের দজ্জাল রমণীর জুজুও গেলো কেটে। মডার্ন মানুষ তার নিজের অস্তিত্ব নিয়ে কোথাও ঠাঁই পেলো না। মাঝরাতে, পথের মোড়ে, চায়ের টঙে, কিংবা অফিস ডেস্কে, পাঠক, আপনিও যদি আমার মত এই নিরর্থকতার (absurdity) মুখোমুখি হয়ে থাকেন, তাহলে এই কথা বুঝতে আপনার মোটেও সমস্যা হচ্ছে না। যদি না বোঝেন, সেই ভালো। সুখে আছেন।
এক্সিস্টেনশিয়ালিজম এই অ্যাবসার্ডিটি স্বীকার করে। এবং, এক্সিস্টেনশিয়ালিজম একধরণের হিউম্যানিজম (হাইড্যেগার অবশ্যই ঠিক হিউম্যানিস্ট না, সকল সেন্টিয়েন্ট বিয়িং-ই এক্ষেত্রে সমান তার কাছে), মানুষের সাবজেক্টিভিটি ও ব্যক্তিস্বাধীনতাকে এটি স্বীকার করে।
এই বইটা এক্সিস্টেনশিয়াল ফিলোসফির বেশ ভালো একটা পরিচিতি হতে পারে। সুপাঠ্য। এবছর পড়া সবচেয়ে ভালো বইগুলোর একটা।