Ratings1
Average rating5
বন্ধুত্বের এই গল্পগুলো আমার খুব ভালো লাগে। মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা কিশোর উপন্যাস এই প্রথম পড়লাম। প্রথমবারেই তাঁর সরস সাবলীল রচনাশৈলী ভীষণ পছন্দ করে ফেললাম। একটা কথা আছে, উৎকৃষ্ট শিশু-কিশোর সাহিত্য বড়ো হয়ে পড়লে নাকি আরো বেশি ভালো লাগে (উদাহরণ - সুকুমার রায়, লীলা মজুমদার, অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আশাপূর্ণা দেবী)। “হাত কাটা রবিন” পড়ে আমি উৎকৃষ্ট কিশোর সাহিত্যের স্বাদ পেলাম।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল খুব পারদর্শিতার সঙ্গে কিশোর মনস্তত্ত্বকে এই উপন্যাসে প্রয়োগ করেছেন। কিশোর বয়সের সবচেয়ে বড়ো দুঃখ হলো, বড়োরা তাদের বুঝতে পারে না। কীভাবে বুঝবে? এই বয়সের জীবন্ত স্বপ্ন এবং বাঁধভাঙা কল্পনার ভান্ডার বড়ো হতে হতে যে ফুরিয়ে যায়!
চাঁদা তুলে ফুটবল কেনার পরে নিজেদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। সবাই চাঁদার পয়সা ফেরত চাইলো। কিন্তু পয়সা তো নেই। তাই বলটাকে কেটে টুকরো টুকরো করা হলো এবং প্রত্যেকে নিজের ভাগের একটা টুকরো বুঝে নিলো (ঝগড়া যদিও কিছুদিন পরেই মিটে যায়)। এই ঘটনাটির গুরুত্ব বড়োরা কখনও বুঝতে পারবে? তারা তো এই “বোকামি”র কথা শুনে খ্যাক খ্যাক করে হাসবে। আমাদের ভেতরে আস্ত যে কৈশোরকালটা ধীরে ধীরে বিস্মৃতির আড়ালে ঢাকা পড়ে যায়, এইসব “আজগুবি” উপাখ্যান পড়লে সেই ঢাকনা খুলে ম্যাজিকের মতো কতো কথা মনের মধ্যে ভেসে ওঠে!
শুধু একটা ব্যাপার একটু খারাপ লেগেছে। যেকোনো কাপুরুষতা কিংবা ভীরুতার দৃষ্টান্ত দেওয়ার সময় “তুই কি মেয়ে নাকি? তাহলে যা, স্কার্ট পরে মেয়েদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে যা!”— সংবেদনশীল লেখকের কলমে এই ব্যাপারটা বেশ কয়েকবার দেখতে পেয়ে একটু অবাক হয়েছি। নইলে এই উপন্যাসের কপালে আমার তরফ থেকে পুরোপুরি পাঁচ তারা রেটিং বরাদ্দ ছিল!