How the Periodic Table Can Now Explain (Nearly) Everything
Ratings2
Average rating3.5
ব্রিটিশ রসায়ন শিক্ষক টিম জেইমস-এর রসায়ন-বিষয়ক বিজ্ঞান-জনপ্রয়করণ বই ‘এলিমেন্টাল'। বিভিন্ন ট্রিভিয়া জেনে রাখার জন্য বেশ কাজের। গুরুত্বপূর্ণ যা যা জানলাম তার সিকিভাগ এখানে রইলোঃ
অক্সিজেন ছাড়া আগুন জ্বালানো সম্ভব নয় আমরা সবাই-ই জানি, কিন্তু অক্সিজেন নিজে নিজে আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারে না, বাইরে থেকে শক্তি সরবরাহ করতে হয়, এ কারনেই আগুন জ্বালাতে তাপ বা ঘর্ষণের প্রয়োজন হয়। তবে পৃথিবীর সবচেয়ে দাহ্য পদার্থটিতে কিন্তু অক্সিজেন নেই। ১৯৩০ সালে বিজ্ঞানীরা পর্যায় সারণীর সবচেয়ে ‘খবিস' দু'টি মৌল ক্লোরিন (Cl) ও ফ্লোরিন (F)-এর সমন্বয়ে তৈরী করেন ক্লোরিন ট্রাইফ্লূওরাইড (ClF3); এ যৌগটি এতটাই আক্রমণাত্নক, যে তা যেকোন বস্তুর সংস্পর্শেই আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারে, এমনকি অগ্নি প্রতিরোধকও ছাড় পায় না। কাঁচ, বালু ইত্যাদি তো বটেই, যে অ্যাসবেস্টস এবং কেভলারের তৈরী পোষাক পরে দমকল কর্মীরা কাজ করেন, তাও এই ClF3-এর সংস্পর্শে এলে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। পানি দিয়ে যে সে আগুন নেভাবেন, তারও উপায় নেই; ClF3 পানিকে জ্বালিয়ে হাইড্রোফ্লুওরিক অ্যাসিডের বিষাক্ত ধোঁয়া উৎপন্ন করে। আমেরিকার লুইজিয়ানাতে একবার ট্রাকে সিলিণ্ডার ভর্তি ১ টন হিমায়িত ClF3 নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো; অমন হীমশীতল তাপমাত্রায় সিলিণ্ডারটি ফেটে যায় আর ClF3কংক্রিটের রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। আগুন নেভাবার পর দেখা যায় রাস্তার নিচে ১ মিটার গভীর পর্যন্ত পুড়িয়ে দিয়ে গেছে ClF3। F পর্যায় সারণীর সবচেয়ে সক্রিয় মৌল; Cl-এর অবস্থান তার ঠিক পরেই। এই দুটি মৌলই ভীষণ ইলেক্ট্রোনেগেটিভ, অর্থাৎ অন্য পদার্থের ইলেকট্রনকে এরা ছিনতাই করে নিয়ে আসে। এদের দু'জনের সংস্পর্শে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক রাসায়নিক দ্রব্যটি তৈরী হবে সেটি আর বিচিত্র কি?
পর্যায় সারণীর এক একটি মৌলের আবিষ্কারের পেছনে অনেক অদ্ভুত সব ঘটনা লুকিয়ে আছে। ১৬৬৯ সালে জার্মান বিজ্ঞানী হেনিগ ব্র্যান্ডট নতুন একটি আবিষ্কারের আশায় মানুষের মূত্র জ্বাল দেয়া শুরু করেন। তাঁর আশা ছিলো, মূত্রের রং যেহেতু সোনালী-হলুদ, একে জ্বাল দিয়ে দিয়ে হয়তো স্বর্ণ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। বহু ঘন্টা জ্বাল দেবার পর অবশেষে তিনি চটচটে একটি দ্রব্যের সন্ধান পান, যার গন্ধ রসুনের মতো, এবং রং কিছুটা নীলচে সবুজ। শুধু তাই নয়, এ বস্তুটি ভীষণ দাহ্য, এবং আগুন জ্বালালে তা ভীষণ উজ্জ্বল সাদা আলোর বিচ্ছুরণ ঘটায়। ‘আলোক বাহক'-এর গ্রীক থেকে ব্র্যান্ডট তাঁর নব্য আবিষ্কৃত এ বস্তুটির নাম দেন ফসফরাস। মানুষের দৈনিক ফসফরাসের চাহিদা মাত্র ০.৫-০.৮ গ্রাম; অতিরিক্ত ফসফরাস মূত্রের সাথে বেরিয়ে যায়। ফসফরাসের সন্ধান পাবার জন্য ব্র্যান্ডটকে তাই বিপুল পরিমাণ মূত্র নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। সাড়ে ৫ টন মূত্র সিদ্ধ করলে ৬০ গ্রামের মতো ফসফরাস পাওয়া যায়!
ধাতু পোড়ালে বিভিন্ন বর্ণের গুঁড়ো পাউডার তৈরী হয়, মধ্যযুগে একে বলা হতো ক্যালক্সেস (calxes)। আগুন নিভে যাবার পর এই ক্যালক্সেসকে ফের পোড়ানো বেশ কঠিন। ১৮ শতকে মানুষ তাই ধারণা করে দাহ্য বস্তুতে নিশ্চয়ই এমন কোন পদার্থ রয়েছে যা আগুন লাগবার পর বাতাসে উবে যায়, রেখে যায় ক্যালক্সেস। তারা এই অজানা পদার্থটির নাম দেয় ফ্লজিস্টন। ফ্লজিস্টনের উস্কানিতেই আগুন জ্বলে এই ধারণা বেশ পোক্ত হয়ে ওঠে জনসমাজে। ব্রিটিশ-ফরাসী বিজ্ঞানী হেনরি ক্যাভেন্ডিশ এই তত্ত্বটি পরীক্ষা করতে নামলেন। তিনি লক্ষ্য করলেন, ধাতু আর অ্যাসিড যখন বিক্রিয়া করে, তখন একটি অদৃশ্য গ্যাসের উদ্ভব ঘটে যেটি তিনি সংগ্রহ করেন। তাঁর প্রথমে ধারণা হয়েছিলো তিনি বোধহয় সেই ফ্লজিস্টনই ধরেছেন, কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো, এই গ্যাসটি দাহ্য। ফ্লজিস্টন বাতাসে উবে যাবার কারণেই যদি আগুন জ্বলে, তাহলে ফ্লজিস্টন নিজেই কীভাবে জ্বলে? এর চেয়েও অবাক করা ব্যাপার হলো, এ গ্যাসটি বিস্ফোরিত হলে পানি উৎপন্ন হয়! ক্যাভেন্ডিশ নিশ্চিত হলেন, পানি মোটেই কোন মৌলিক পদার্থ নয়; অন্য কিছুর মিশ্রণে পানি তৈরী হয়। সে সময়ের মানুষ বিশ্বাস করতো প্রকৃতিতে ৪টিই মাত্র মৌলিক পদার্থ রয়েছেঃ বায়ু, পানি, মাটি, ও আগুন। ক্যাভেন্ডিশ সে বিশ্বাসের গোড়ায় প্রথম আঘাতটা হানেন।
ক্যাভেন্ডিশের অল্প কিছুদিন পর আঁতোয়া লাভঁয়শিয়ে একটি দারুণ পরীক্ষা করে বসেন। তিনি নয় ফুট লম্বা বিশাল একটি আতশ কাঁচে সূর্যের আলো কেন্দ্রীভূত করে এক প্লেট ভর্তি পারদে আগুন জ্বালান। পুরোটা পারদ জ্বলে শেষ হয়ে গেলে যে ক্যালক্সেস রয়ে যায়, সেটি ওজন করে দেখা গেলো আগুন জ্বালাবার আগে প্লেটে রাখা পারদের চেয়ে তা ভারী! অর্থাৎ, আগুন জ্বালাবার ফলে পারদ থেকে কিছু বেরিয়ে যায়নি, বরং, বাতাসে থাকা কিছু একটা পারদের ক্যালক্সেসের সাথে যুক্ত হয়ে এর ওজন বাড়িয়েছে। লাভঁয়শিয়ে এর নাম দেন অক্সিজেন। ধাতু আর অ্যাসিডের বিক্রিয়া ঘটিয়ে যে গ্যাসটি ক্যাভেন্ডিশ বন্দী করেছিলেন, লাভঁয়শিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে বোঝেন তা আসে অ্যাসিড থেকে, ধাতু থেকে নয়। উত্তপ্ত অবস্থায় অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে এ গ্যাসটি পানি উৎপন্ন করে, তাই তিনি এর নাম দেন হাইড্রোজেন (পানি প্রস্তুতকারক)।
প্রকৃতিতে পাওয়া খনিজগুলোর কে কতখানি শক্ত তা নির্ণয় করবার জন্য ১৮১২ সালে জার্মান বিজ্ঞানী ফ্রিডরিখ মোস ১ থেকে ১০ অব্দি দাগানো একটি স্কেল তৈরী করেন। লোহার অবস্থান এ স্কেলে ৪, দাঁতের এনামেলের ৫, আর সবচেয়ে উঁচু ১০ নাম্বার অবস্থানটি হীরার, অন্তত ২০০৩ সাল অব্দি। ২০০৩ সালে জাপানী একদল বিজ্ঞানী তৈরী করেন পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন পদার্থ-হাইপারডায়মন্ড। পৃথিবীর অভ্যন্তরে বিলিয়ন বিলিয়ন বছর ধরে প্রচণ্ড চাপ ও তাপে কার্বন ধীরে ধীরে হীরায় পরিণত হয়। হীরার স্ফটিকটি তৈরী হয়ে গেলে অগ্ন্যুৎপাতের মাধ্যমে পৃথিবী তা প্রায় বমি করে বের করে দেয়। হীরা আদতে বেশ অস্থিতিশীল একটি বস্তু, কয়েক হাজার বছর পর তা ক্রমশ ক্ষয়ে কয়লায় পরিণত হয়। তাই প্রশ্ন হলো, এর উল্টোটা কি তাহলে সম্ভব? কয়লা থেকে কি হীরা বানানো যায়? ২০০৩ সালে জাপানী বিজ্ঞানী তেতসুও ইরিফুনে আর তাঁর দল ঠিক এ কাজটাই করেন। তাঁরা বিশেষ একরকম ‘প্রেশার কুকার'-এ কয়লা নিয়ে প্রচণ্ড তাপ ও চাপ প্রয়োগ করে যে বস্তুটি প্রস্তুত করেন, তা প্রকৃতিতে এর আগে কখনো দেখা যায়নিঃ হাইপারডায়মন্ড। এমন প্রচণ্ড তাপ ও চাপ প্রয়োগ করে কৃত্রিমভাবে হীরা বানাবার আরো বহু নজির অবশ্য আছে। জার্মানীতে পিনাট বাটার বা বাদামের মাখন থেকে হীরা বানিয়েছেন ড্যান ফ্রস্ট। পুঁজিবাদের দেশ আমেরিকা কৃত্রিম হীরা বানাবার এই শিল্পকে আরো এক ধাপ ওপরে নিয়ে গেছে। ইলিনয়ের কম্পানি লাইফজেম আপনার প্রিয়জনের ছাইভস্ম থেকে এই বিশেষ প্রক্রিয়ায় হীরা বানিয়ে দেবে। ক্যারেটের ওপর ভিত্তি করে ৩,০০০ থেকে ১৯,০০০ ডলার অব্দি দাম পড়তে পারে লাইফজেম হীরার।
১৯৮৯ সালে আইবিএম মাত্র ৩৫টি জিনন পরমাণু দিয়ে তাদের কম্পানির লোগো বানিয়ে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দেয়। এরপর ২০১৩ সালেই তারা তামার পাতের ওপর কার্বন মনোঅক্সাইডের পরমাণু দিয়ে দেড় মিনিটের একটি আস্ত চলচ্চিত্র তৈরী করে ফেলে! আ বয় অ্যান্ড হিজ অ্যাটম-নামের এ চলচ্চিত্রটি বর্তমানে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে ক্ষুদ্রতম চলচ্চিত্র হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। আমরা জানি অনেকগুলো স্থির চিত্রকে একসাথে খুব তাড়াতাড়ি আগুপিছু করলে তা একটি চলচ্চিত্রে পরিণত হয়। আ বয় চলচ্চিত্রটি ঠিক সেভাবেই অনেকগুলো স্থির চিত্রের সমন্বয়ে তৈরী। যে যন্ত্রটি দিয়ে পরমাণুগুলোর ছবিগুলো তোলা হয় সেটির নাম স্ক্যানিং টানেলিং মাইক্রোস্কোপি (STM)। ধরুন, আপনি একটি অন্ধকার, গভীর গর্তের কিনারে দাঁড়িয়ে গর্তে পাথর ছুঁড়ে মারছেন। গর্তের তলায় পাথরটি যেতে কত সময় নিলো তা থেকে আপনি গর্তের গভীরতা নির্ণয় করতে পারবেন। STM যন্ত্রটি অনেকটা সেভাবেই কাজ করে। এটি ঠিক ছবি তোলার যন্ত্র নয়, তাই এতে কোন লেন্স নেই। এ যন্ত্রে মূলত একটি সরু নলের শেষ মাথায় খুব আলতোভাবে কিছু পরমাণু আটকে থাকে; যখনি এর ভেতর দিয়ে বিদ্যুৎপ্রবাহ চালানো হয়, তখন সেই পরমাণুগুলো ছুটে বেরিয়ে এসে নিচে নমুনার পৃষ্ঠে আঘাত করে। পরমাণুগুলোর নিচে পড়তে কতখানি শক্তি ক্ষয় হলো, তা হিসেব করে STM জানিয়ে দেয় নমুনাটি নল থেকে কতখানি দূরে। পরমাণুর ‘গুলিবর্ষণ' করা এ নলটি নমুনার পৃষ্ঠের অসমতার ওপর ভিত্তি করে ক্রমাগত ওপরে নিচে ওঠানামা করতে থাকে, ফলে পরমাণুগুলোর শক্তি ক্ষয়েরও তারতম্য ঘটে। এভাবে আস্তে আস্তে গোটা পৃষ্ঠটি স্ক্যান করা হয়ে গেলে সে পৃষ্ঠের একটি মানচিত্র আমরা পাই। আ বয় চলচ্চিত্রটি এমন অনেকগুলো ‘মানচিত্রের' স্মমন্বয়ে তৈরী।
ছবিঃ ৩৫টি জিনন পরমাণু দিয়ে IBM-এর লোগো। সূত্রঃ সায়েন্স ফটো লাইব্রেরী
তাপমাত্রার সাথে সাথে গ্যাসের আয়তন পরিবর্তন হয়, এটি আমরা পাঠ্যবইতে পড়েছি। তাপমাত্রা যতো কমানো হবে, গ্যাসের আয়তন ততো কমতে থাকবে। উল্টোটিও সত্যি; তাপমাত্রা বাড়ার সাথে সাথে গ্যাসের আয়তনও বাড়তে থাকে, বোমা বিস্ফোরণে গ্যাসের এই বৈশিষ্ট্যটিকেই কাজে লাগানো হয়। প্রচণ্ড তাপমাত্রায় গরম গ্যাসের আয়তন খুব দ্রুত বাড়িয়ে বিস্ফোরণের সীমা বাড়ানো হয়। তাপমাত্রার সাথে আয়তনের এ সম্পর্কটিকে আমরা চার্লসের সূত্র বলে জানি। জাক চার্লস ইঙ্গিত করেছিলেন, গ্যাসের তাপমাত্রা কমাতে কমাতে একটা সময় এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি হবে যে গ্যাস আয়তনে আর ছোট হতে পারবেনা; অচিন্তনীয় এই ভীষণ ঠাণ্ডা তাপমাত্রাটির অস্তিত্ব বাস্তবে নেই, তাই এটিকে অ্যাবসোলিউট টেম্পারেচার বা পরম তাপমাত্রা বলা হয়, যার মান -২৭৩.১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস। মহাকাশে নিঃসীম শূণ্যতায় যেখানে কোন নক্ষত্রের আলো পৌঁছায়না, সেখানের গড় তাপমাত্রা -২৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। একমাত্র ব্যুমেরাং নেবুলায় -২৭২ ডিগ্রী সেলসিয়াসের সন্ধান পাওয়া গেছে, পরম তাপমাত্রার মাত্র এক ডিগ্রী ওপরে।
তবে গোটা মহাবিশ্বের সবচেয়ে ঠাণ্ডা অঞ্চলের রেকর্ডটি পৃথিবীর দখলে; ম্যাসাচুসেটসে মার্টিন জুইয়ারলেইন-এর গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে এ তাপমাত্রা তৈরী করা হয়েছে সোডিয়াম-পটাশিয়াম (NaK) নামক একটি নতুন ধাতু তৈরী করার জন্য। দুটি ধাতব পরমাণু সচরাচর বন্ধনে আবদ্ধ হয় না; বিশেষ এক অবস্থার সৃষ্টি করে অনেকটা প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়েই এই ধাতুটি বানানো হয়। গ্যাসীয় Na ও K-এর পরমাণু দিয়ে প্রথমে একটি চেম্বার ভর্তি করে এরপর মিশ্রণটিকে ৭৩০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপে উত্তপ্ত করা হয়। চেম্বারের চারপাশে এরপর একটি চৌম্বকক্ষেত্র প্রয়োগ করা হয়, যার কারণে পরমাণুগুলো আর ছোটাছুটি করতে পারে না, তারা বাধ্য হয়ে একে অপরের সাথে বন্ধন তৈরী করে। এই প্রক্রিয়াটিকে ফেশবাখ রেজোনেন্স বলে। এই গ্যাসের মিশ্রণটিকে এরপর একটি উচ্চ শক্তির এবং একটি অপেক্ষাকৃত বেশ কম শক্তির লেজার দিয়ে আঘাত করা হয়। উচ্চ শক্তির লেজারের (অর্থাৎ উচ্চ কম্পাঙ্কের আলো) আঘাতে গ্যাস পরমাণুগুলো শক্তি হারিয়ে একই বর্ণের আলোর বিচ্ছুরণ ঘটাতে থাকে। ওদিকে নিম্ন শক্তির লেজার যখন আঘাত করে (অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত কম কম্পাঙ্কের আলো) তখন পরমাণুগুলো ২য় সেই লেজারের কম্পাঙ্কের সাথে নিজেদের কম্পাঙ্ক মেলাবার চেষ্টা করতে থাকে। উচ্চ কম্পাঙ্ক থেকে নিম্ন কম্পাঙ্কে এমন দ্রুত পরিবর্তনের জন্যই তাপমাত্রা হু হু করে নেমে যায়। এই প্রক্রিয়ায় পরম তাপমাত্রার এক ডিগ্রী ওপরের তাপমাত্রার (-২৭২.১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস) ৫ বিলিয়ন ভাগের এক ভাগ অব্দি শীতলতা অর্জন করা গেছে। ৫ বিলিয়ন ভাগের এক ভাগ, কিন্তু তবুও তা পরম তাপমাত্রা (-২৭৩.১৫ ডিগ্রী) নয়, কী আশ্চর্য, তাই না?
আমরা যারা ঝাল খাবার খেতে পছন্দ করি, তারা অনেকেই জানি, কোন খাবার কতখানি ঝাল তা নির্ণয় করবার জন্য স্কোভিল হিট ইউনিট (SHU) নামে একটি একক রয়েছে। আমেরিকান বিজ্ঞানী উইলবার স্কোভিল ১৯১২ সালে এ স্কেলটি প্রণয়ন করেন। কোন একটি ঝাল খাবারের ঝাল উপাদানটি পানিতে কতবার মেশালে ঝাল অনুভূতিটি আর টের পাওয়া যাবে না তার ওপর ভিত্তি করে এ স্কেলটি দাঁড় করানো। হ্যালাপিনিও মরিচের তেলটিকে ৮,০০০ বার পানি দিয়ে ঘোলা করলে ঝাল স্বাদটি আর থাকে না, তাই এর SHU ৮,০০০। তাবাস্কো সসের SHU ৫০,০০০, আর পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল মরিচ ড্র্যাগন'স ব্রেথ চিলি'র SHU ২.৪ মিলিয়ন! এরকম ঝাল শরীরে অ্যানাফিলেকটিক শক বা ভয়ানক এক অ্যালার্জির উদ্ভব ঘটায়; দ্রুত এপিনেফ্রিন প্রয়োগ না করলে মৃত্যু খুব অসম্ভব নয়।
তবে পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল পদার্থটির তুলনায় ড্র্যাগনস ব্রেথ নস্যি। রেজিনিফেরাটক্সিন নামক এই রাসায়নিক উপাদানটি পাওয়া যায় ইউফোরবিয়া রেজিনিফেরা নামক একধরণের গাছ থেকে। এর SHU যে ঠিক কত তা সরাসরি নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি (সঙ্গত কারণেই!), তাই ঘুরপথে SHU হিসেব করতে হয়েছে। আমাদের শরীরে তাপ অনুভব করার যে সেন্সরটি আছে, সেটির নাম TRPV1 রিসেপ্টর। খাবারের ঝাল উপাদানটি এই রিসেপ্টরটিকে গুঁতো দেয় বলেই আমরা ঝাল টের পাই। লাল মরিচের উপাদান ক্যাপ্সাইসিন এই TRPV1-এর সাথে যেভাবে বন্ধন তৈরী করে, রেজিনোফেরাটক্সিন তার এক থেকে দশ হাজার গুণ বেশী ভালোভাবে বন্ধন তৈরী করতে পারে। ক্যাপ্সাইসিনের SHU ১৬ মিলিয়ন, রেজিনোফেরাটক্সিনের তাহলে ১৬-১৬০ বিলিয়ন! পৃথিবীর সবচেয়ে ঝাল বস্তুটির ব্যাপারে যখন জানলামই, সবচেয়ে মিষ্টি বস্তুটি আর অজানা থাকবে কেন? এ রাসায়নিক উপাদানটির নাম লাগডানেইম, চিনির চেয়ে ২৩০,০০০ গুণ বেশী মিষ্টি এটি। ফাউ হিসেবে আরো কয়েকটি রাসায়নিক পদার্থের নাম জেনে রাখছি; সবচেয়ে কৃষ্ণাভ বস্তুটির নাম ভ্যান্টাব্ল্যাক; যে কোন আলোর ৯৯.৯৬৫%-ই তা শুষে নেয়। আর পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্গন্ধময় দুটি পদার্থ হলো প্রোপ্যান্থিওন, এবং মিথেনেথিওল। এই দুটি বস্তু এতই ভয়ানক গন্ধ ছড়ায় যে ২০১৪ সালে ডুপন্ট কেমিক্যালের ৪ জন কর্মী দূর থেকে গন্ধ শুঁকেই প্রাণ হারান।
উৎসব-পার্বনে আমরা যে রঙবেরঙের বাজি পোড়াই, তাতে বিভিন্ন ধাতুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বিশেষ বিশেষ বর্ণের জন্য বিশেষ বিশেষ ধাতু প্রয়োজন। হলুদ রঙয়ের জন্য চাই সোডিয়াম, সবুজের জন্য বেরিয়াম, নীলের জন্য তামা, আর লাল রঙয়ের জন্য স্ট্রন্টিয়াম। গোলাপী রঙের বাজি সবচেয়ে কঠিন; এ রঙটির জন্য সচরাচর তামা এবং স্ট্রন্টিয়ামের একটি মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়। যে কোন বিস্ফোরণ ঘটাতে হলে একটি অস্থিতিশীল রাসায়নিক উপাদানের প্রয়োজন, যাকে অল্প একটু উস্কানী দিলেই চলে। বোমা-বাজির ক্ষেত্রে এমন অস্থিতিশীল বস্তুই ব্যবহার করা হয়। তবে পৃথিবীর সবচেয়ে অস্থিতিশীল পদার্থটি একটু বেশীই অস্থিরমতি! এর নাম অ্যাজাইডোঅ্যাজাইড অ্যাজাইড। একটি গোল চক্রকে ঘিরে ১৪টি N ও ২টি C পরমাণু রীতিমতো গায়ে গা লাগিয়ে ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে এই রাসায়নিক পদার্থটি গঠন করে। অত ছোট জায়গায় এমন ভীষণ ভীড়বাট্টা বলেই এ পদার্থটি এত অসহিষ্ণু। এটি পানিতে রাখলে বিস্ফোরিত হয়, এর ওপর ফুঁ দিলে বিস্ফোরিত হয়, এমনকি টিভির রিমোটে যে ইনফ্রা রেড রশ্মি থাকে সেটির সংস্পর্শেও ক্ষেপে যায়।
পর্যায় সারণীর পরের দিকের মৌলগুলোর পরমাণুর আকার বড় হওয়ায়, আর নিউট্রন সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় এই পরমাণুগুলো বেশ অস্থিতিশীল থাকে। নিউট্রনের আকর্ষণ শক্তি বেশ কম-এটিও অন্যতম কারণ। এরা ক্রমশ তেজষ্ক্রীয় বিকিরণের মাধ্যমে ক্ষয় হয়ে যেতে থাকে। অ্যাক্টিনিয়ামের ৮৯টি প্রোটন; বছর ২০-এর মধ্যেই এটি ক্ষয়ে ক্ষয়ে মূল পরিমানের অর্ধেকে পরিণত হয় (হ্যাফ লাইফ)। অপরদিকে রুবিডিয়ামের মাত্র ৩৭টি প্রোটন, তাই এর হ্যাফ লাইফ ৪৯ বিলিয়ন বছর। এমন তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মাধ্যমে ক্ষয়প্রাপ্ত মৌলগুলোর নিউট্রন সংখ্যা মৌলগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় থাকলে যে নিউট্রন সংখ্যা থাকতো তার চেয়ে বেশ ভিন্ন; একমাত্র তেজস্ক্রীয় বিকিরণের মাধ্যমেই নিউট্রন সংখ্যার এ ওলট-পালটটি ঘটে। এ কারণে সহজেই বোঝা যায় কোন মৌলটি ক্ষয়ে ক্ষয়ে আজকের অবস্থায় এসেছে। মূল মৌল আর বিকিরিত মৌলটিকে যদি আমরা মা-মেয়ে হিসেবে কল্পনা করে নেই, তাহলে এই মা-মেয়ের প্রোটন ও নিউট্রনের অনুপাত থেকে আমরা হিসেব করে নিতে পারি মৌলটির বয়স কত, এবং কতদিন ধরে বিকিরিত হয়ে চলেছে। পৃথিবীর বয়স যে সাড়ে ৪ বিলিয়ন বছর তা আমেরিকান রসায়নবিদ ক্লেয়ার প্যাটারসন ঠিক এই পদ্ধতিতেই নির্ণয় করেছিলেন।
তেজস্ক্রীয় বিকিরণের মাঝে অন্যতম প্রধান ২টি হলো আলফা ও বেটা রেডিয়েশন। যখন একটি ভারী মৌল থেকে ২টি প্রোটন ও ২টি নিউট্রন বেরিয়ে যায় (অর্থাৎ হিলিয়াম), তখন তাকে আলফা রেডিয়েশন বলে। আলফা রেডিয়েশন সবসময় ২ ধাপ পেছনে নিয়ে যায়, (অর্থাৎ, ৯৪ নাম্বার মৌলটি ২টি প্রোটন ও ২টি নিউট্রন হারিয়ে ৯২ নাম্বারে পরিণত হয়)। অপরদিকে, যদি নিউক্লিয়াসের নিউট্রনটিকে কোনভাবে জোর করে প্রোটনে পরিণত করা যায় (এবং ১টি ইলেকট্রনকে লাথি দিয়ে বের করে দেয়া যায়), তখন সেটি ১ ধাপ সামনে এগিয়ে যায়, এটিকে বেটা রেডিয়েশন বলে। এভাবে ৯২ নাম্বার মৌল ৯৩ নাম্বার-এ পরিণত হয়। পর্যায় সারণীতে যে ২৪টি ‘মানবসৃষ্ট' মৌল রয়েছে, যেগুলো প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে নেই, সেগুলোর অনেকগুলোই এভাবে বেটা রেডিয়েশনের মাধ্যমে পাওয়া গেছে। ১৯৪০ সালে ঠিক এভাবেই নতুন মৌল নেপচুনিয়াম সংশ্লেষণ করেন বিজ্ঞানীরা; পৃথিবী তার সাড়ে ৪ বিলিয়ন বছরের ইতিহাসে এ বস্তুটি কখনো দেখেনি এর আগে!
আলফা রেডিয়েশনের ফলে যে আলফা পার্টিকেল নির্গত হয় (২টি প্রোটন ও ২টি নিউট্রন), তাদের গতি সেকেন্ডে ১৫ মিলিয়ন মিটার, এ কারণেই তেজস্ক্রীয় পদার্থের কাছাকাছি যাওয়া আমাদের জন্য বিপজ্জনক, প্রচণ্ড গতিতে DNAকে এরা ছিন্নভিন্ন করে দেয়। ৮১ নাম্বার মৌল থ্যালিয়ামকে উত্তপ্ত করে গ্যাস বানিয়ে প্রচণ্ড চাপে রেখে যদি এর দিকে আলফা পার্টিকেল ছুঁড়ে মারা হয়, তাহলে প্রতি কয়েক হাজার থ্যালিয়াম পরমাণুর মাঝে ১টি স্বর্ণে পরিণত হয়। মধ্যযুগে বিশেষত শীষা থেকে স্বর্ণ তৈরী করবার নেশায় বহু বহু আলকেমিস্ট যুগের পর যুগ ঘুম হারাম করে গেছেন। তাঁদের বহু আরাধ্য সে রেসিপিটা আজ হাতের এত কাছে!
আলফা রেডিয়েশন যেমন শুধু ভারী মৌলগুলোর ক্ষেত্রেই ঘটে, বেটা'র ক্ষেত্রে তা নয়। যে কোন মৌলই বেটা রেডিয়েশনে অংশ নেয়, বিশেষত যাদের নিউট্রন সংখ্যা বেশী। কিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক নিউট্রনের জন্য বেটা রেডিয়েশন বেশী ঘটে, যেগুলোকে ম্যাজিক নাম্বার বলা যায়। প্রকৃতিতে যত পটাসিয়াম (K) আছে, তার প্রায় সবখানেই ১৯টি প্রোটন ও ২০টি নিউট্রন আছে, কিন্তু ০.০১২% K-তে ২১টি নিউট্রন থাকায় এরা বেটা রেডিয়েশনে ভীষণ আগ্রহী। এটিকে K-40 বলা হয়। আমাদের খাবারের মাঝে K সবচেয়ে বেশী আছে কলায়। আপনি যদি ১ বছর ধরে প্রতিদিন ১৪টি করে কলা খান, তাহলে শরীরের জন্য ক্ষতিকারক তেজস্ক্রীয়তার যে সীমা (১ সিভার্টের ১/৫০০ ভাগ) সেটি ছুঁয়ে যাবেন, এবং আপনার শরীরে একটি মিনি-চেরনোবিল ঘটিয়ে ফেলতে পারবেন!
অ্যাসিডের সংজ্ঞা কী হওয়া উচিৎ এ নিয়ে অনেক তর্কাতর্কি হয়েছে ইতিহাসে, তবে বর্তমানে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা হচ্ছে অ্যাসিড এমন একটি যৌগ যা পানিতে ভেঙে প্রোটন (H+ আয়ন) ছেড়ে দেয়। এমন লাগামছাড়া ১টি প্রোটন নিজের দিকে ইলেকট্রনকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে আসবার জন্য মুখিয়ে থাকে। কাঁচ বা প্লাস্টিকে পরমাণুগুলোর বন্ধন শক্ত বলে অ্যাসিড সেখানে বেশী জোর খাটাতে পারে না, কিন্তু দুর্বল বন্ধন পেলেই (যেমন আমাদের শরীর) অ্যাসিড তার মাস্তানী দেখিয়ে দেয়। অ্যাসিড তার এই প্রোটনটি ছেড়ে দেবার জন্য কতখানি উন্মুখ-এর ওপরই নির্ভর করে অ্যাসিডের শক্তি, যে স্কেল দিয়ে এটি মাপা হয়, সেটিকে বলে PKa স্কেল। রিখটার স্কেলে যেমন প্রতিটি সংখ্যা আগের সংখ্যার চেয়ে ১০গুণ বড়, PKa স্কেলেও ঠিক তাই, তবে এ স্কেলটি কাজ করে বিপরীত দিক থেকে। ভিনেগারের PKa ৫, পালং শাকে'র অক্সালিক অ্যাসিডের ৪, অর্থাৎ অক্সালিক অ্যাসিড ভিনেগারের চেয়ে ১০গুণ বেশী শক্তিশালী।ওদিকে ক্রোমিক অ্যাসিডের PKa ১, মানে অক্সালিক অ্যাসিডের চেয়ে তা ১,০০০ গুণ শক্তিশালী (ভুলেও খেতে যাবেন না!)।
যে সকল অ্যাসিডের প্রোটন ধরে রাখার কোন ইচ্ছেই নেই, যে কোন ছুতোতে প্রথমেই ছেড়ে দেয়, তাদের সুপারঅ্যাসিড বলে। সালফিউরিক অ্যাসিডকে আমরা অত্যন্ত শক্তিশালী অ্যাসিড বলে জানি, এর PKa -৩। পারক্লোরিক অ্যাসিড একটি সুপারঅ্যাসিড, যার PKa -১০, সালফিউরিক অ্যাসিডের চেয়ে ১০ মিলিয়ন গুণ শক্তিশালী। এখানেই শেষ নয়, ট্রিফ্লিক অ্যাসিডের PKa -১৪, সালফিউরিকে অ্যাসিডের চেয়ে তা ১০০ বিলিয়ন গুণ বেশী শক্তি ধরে। অন্তর্জালে সন্ধান করলে সচরাচর ফ্লুওরোঅ্যান্টিমনিক অ্যাসিডকে সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যাসিড হিসেবে পাওয়া যায় (PKa -১৯), তবে একেও বালখিল্য বানিয়ে দিতে পারে এমন অ্যাসিডও মানুষ বানিয়েছে, কিন্তু সেটা এতটাই ভয়ঙ্কর যে এখন পর্যন্ত নাকি একবারই তা করা হয়েছে। সুপার অ্যাসিড যেহেতু H-কে প্রথম সুযোগেই বের করে দেয়, তাই সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যাসিডটি এমন হওয়া চাই যেখানে H কারো সাথে বন্ধন-ই বানাতে চাইবে না। He পর্যায় সারণী'র সবচেয়ে অনাগ্রহী মৌল; কারো সাথেই তার বন্ধনে আগ্রহ নেই। ১৯২৫ সালে প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে রীতিমতো গায়ের জোর খাটিয়ে হিলিয়াম হাইড্রাইড নামক সুপারঅ্যাসিডটি বানানো হয়, এর PKa -৬৯!
PKa-স্কেলটি কিভাবে কাজ করে তা নিয়ে অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে। এটি pH-এর মতোই। আমরা জানি ৮১-কে আমরা ৩^৪ হিসেবে লিখতে পারি। লগের হিসেবেঃ
Log ৮১= ৪।
যদি এক বোতল অ্যাসিডে ১০০,০০০টি H আয়ন থাকে, তাহলে তার লগ নিলে পাইঃ
Log (১০) ১০০,০০০ = ৫
বেশীর ভাগ অ্যাসিডেই আসলে H থাকে খুব কম পরিমাণে; H-এর ঘনত্ব ০.০০০০১ থেকে ১ এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ।। এই সংখ্যাগুলোকে আমরা যেহেতু ১০-৬, এভাবে লিখি, তাই সেই বিয়োগ চিহ্নটিকে লগের সামনে নিয়ে এসে নতুন ভাবে প্রকাশ করিঃ -Log ০.০০০০০১ = ৬; যদি অনেক বেশী ঘন অ্যাসিড হয় তাহলে হয় -Log ১ = ১। pH-এর p এসেছে potenz শব্দটি থেকে যার আক্ষরিক অর্থঃ “১০-এর ওপর যে ঘাতটি বসবে” (pH = -Log 10)। pH দিয়ে মাপা হয় অ্যাসিডে H-এর পরিমাণ, PKa দিয়ে মাপা হয় অ্যাসিডের শক্তি, অর্থাৎ প্রোটন ছেড়ে দিতে অ্যাসিডটি কতখানি উৎসাহী। যেহেতু খুব অল্প H-ই অ্যাসিড থেকে বেরিয়ে আসে, তাই Ka-এর মান হিসেবে আমরা অনেক বড় সব ঋণাত্নক নাম্বার পাই।