How to Stop Worrying and Start Living

How to Stop Worrying and Start Living

Ratings27

Average rating4.1

15

খুব পুরোনোপন্থী ভঙ্গিতে লেখা একটা বই। আজকালকার “মনোবিজ্ঞানসম্মত” স্মার্ট সেল্ফ-হেল্প বইয়ের সমুদ্রে এই বইটার তলিয়ে যাবার কথা। কিন্তু আমার কাছে তলিয়ে যায়নি। এই তো কয়েকদিন আগে আমার কোভিড হয়েছিলো। সন্ধ্যেবেলা মাথাব্যথা করছিলো বেশ। একটা মাথাব্যথার ট্যাবলেট খেলে কমে যেতো হয়তো। ট্যাবলেটের বদলে, মা যখন কপালে হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো, মাথাব্যথা কি উধাও হয়ে গেছিলো? না, যায় নি। কিন্তু একটা মানসিক উপশম হয়েছিলো। মনে হয়েছিলো, ব্যথাটা সহ্য করে নিতে পারি। এই বইটা বহুবার আমাকে সেই মানসিক উপশম দিয়েছে।

জীবনে অবশ্যম্ভাবীভাবে মাঝেমাঝে বেকায়দায় পড়ে যাই আমরা। নিজেকে অসহায় মনে হয়। কিংবা হয়তো, উটকো অতিথির মতো, দুঃখ এসে জাপটে ধরে। বলে, “কী বে? সব খবর ভালো তো? অনেকদিন তোর সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ নেই।” আরো কতরকম কতকিছু। আমি তো বইকেই সবসময় বন্ধু হিসেবে মেনে এসেছি। নতুন চাকরি পেয়ে বই কিনেছি। প্রেম ভেঙে যাবার পরে বই কিনেছি। বেড়াতে যাবার ট্রেনের টিকিট কেটে ফেলার আনন্দে বই কিনেছি। ফুটবল খেলতে গিয়ে ঠ্যাং ভেঙে যাবার কারণে, বেড়াতে যাওয়া ক্যানসেল করতে হয়েছে, তখন পায়ে প্ল্যাস্টার বাঁধা অবস্থায়, আর কী করবো? বাড়ি থেকে অর্ডার দিয়ে সেই বইই কিনেছি!

অনেকবছর আগে, আমার কলেজজীবনে, চেন্নাইয়ের একটা ফুটপাথ থেকে এই বইটা কিনেছিলাম। সন্ধ্যা নামছিলো। জোয়ারের মতো মানুষের ঢল নেমেছিল চারিদিকে। কিন্তু নিজেকে একদম একা মনে হচ্ছিলো। একটা বিশেষ কারণে দুশ্চিন্তা কুরে কুরে খাচ্ছিলো আমাকে। দুশ্চিন্তা আর ভয়। রাস্তার অল্প আলোয় এই বইটার দিকে হঠাৎ নজর যায়। হোস্টেলে ফিরে এসে অনেকক্ষণ বইটা পড়লাম। ব্যাস, পরদিন সকালেই আমার বিপদ কেটে গ্যালো? দুশ্চিন্তা গায়েব হয়ে গ্যালো? আমি মিলখা সিংয়ের মতো দৌড়তে আরম্ভ করলাম? নাহ, এসব কিছুই হয়নি। নিজের সঙ্গে মানসিক যুদ্ধ করে, পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে, অনেক ঝামেলার পরে, সেই বিপদ থেকে মুক্তি পেয়েছিলাম।

এই বইটা, তার অনেক হাস্যকর পরামর্শ দিয়ে, পুরোনো দিনের মানুষদের মতো “সবজান্তা” পরামর্শ দিয়ে, বস্তাপচা পরামর্শ দিয়ে, এবং প্রচুর দরকারি পরামর্শ দিয়ে, তারপর থেকে আমার পাশেপাশে থেকেছে। অনেক মনখারাপের রাতে, দুশ্চিন্তার দুপুরে, একাকী সন্ধ্যেবেলা, নিদ্রাহীন ভোরবেলা, আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে, যা ঘটছে তার থেকে বেরিয়ে আসবার উপায় আমার হাতেই রয়েছে। আর কেউ নয়, আমাকেই দাঁড়াতে হবে নিজের পাশে। যদি হাল ভেঙে যায়, আমাকেই মেরামত করতে হবে। ডুবে গেলে ভেসে উঠতে হবে। আমাকেই। কিংবা, কোনো পরিস্থিতিকে মেনে নিয়ে বলতে হবে, আর নয়। অনেক হয়েছে, এবার থেমে যেতে হবে। এবার রাস্তা বদল করতে হবে!

এই বইটার কাছে আমার অনেক ঋণ জমে আছে। অনেকের কাছে বইটা হাসির খোরাক হলেও, যখনই ডেকেছি, আমার পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের অনেক বিচ্যুতি সত্ত্বেও কিছু মানুষ যেমন আমাদের ছেড়ে যায়না, এই বইটাও আমাকে ছেড়ে যায়নি।

For every ailment under the sunThere is a remedy, or there is none.If there be one, try to find it,If there is none, never mind it!
August 5, 2022Report this review